আমার স্বামী বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ফুল দিতে গিয়েছেন: রিকশাচালকের স্ত্রী চুমকি

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়া সেই রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এদিন জামিন শুনানি শেষে তার স্ত্রী চুমকি খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী কোনও রাজনীতি করেন না। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ফুল দিতে গিয়েছেন।’

রবিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।

রবিবার সকালে ১০ মাসের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে আদালতে আসেন আজিজুর স্ত্রী চুমকি খাতুন। শুনানিকালে আদালতে বসেছিলেন তিনি।

পরে দুপুরে শুনানি শুরু হয়। আজিজুরের পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিন শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘আসামি একজন রিকশাচালক। ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। আগের একটা পেন্ডিং মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আজিজুর দিন আনে, দিন খায়। তার রিকশাটাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।’

শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত আজিজুরের জামিনের আদেশ দেন।

পরে আদালত থেকে বেরিয়ে তার চুমকি বলেন, ‘আমার স্বামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আবেগের বশে সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন। জামিন পেয়েছেন, আমি খুশি।’

আজিজুরের প্রতিবেশী জোবায়ের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে তিনি ফুল দিতে গিয়েছেন। তিনি ভাড়ায় রিকশাটা চালান। সাত হাজার টাকা দিয়ে রিকশা কেনার ক্ষমতা তার নেই। তার জামিন হওয়ায় আমরা পরিবারের সবাই খুশি।’

প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। পরে তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ওই দিন আজিজুর জানান, ‘আমি কোনও দল করি না। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। তাই এসেছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আসিনি। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। তাই আমার হালাল টাকা দিয়ে কেনা ফুল নিয়ে এসেছি।’

শনিবার (১৬ আগস্ট) জুলাই আন্দোলনের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণী থেকে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানার নিউমার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাব এলাকার মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম। ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিরা গুলি, পেট্রোল বোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। গুলিবিদ্ধ হন আরিফুল ইসলাম। পরে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে দুই মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হন। এ ঘটনায় গত ২ এপ্রিল ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 Hessel st, London E1 2LR, London, UK| Phone: +44 7961 008453 | Email: info@nrbtvlondon.com , Nrbtvlondon24@gmail.com